চট্টগ্রাম প্রতিনিধি সিএইচটি নিউজ ॥ বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নির্বিচারে খুন, গ্রেফতার, অপহরণ ও শারিরীক নির্যাতনসহ অব্যাহত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে এবং আটক ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পাহাড়ের চার গণতান্ত্রিক সংগঠন।
‘ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা’র সন্ধান ও মুক্তি চাই’ এই দাবি সম্বলিত
শ্লোগানে আজ ১০ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন,
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ চট্টগ্রাম নগর ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার
যৌথ উদ্যোগে এ বিক্ষোভের আয়োজন করে।
বিকাল সাড়ে ৩টায় নগরীর ডিসি হিল সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা
হয়। মিছিলটি প্রেসক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে চেরাগী মোড় সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের
মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে পিসিপি'র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ত্রিরত্ন চাকমা সভাপতিত্বে ও নগর সম্পাদক অমিত চাকমার সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্টি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম-এর মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি রেশমী মারমা ও পিসিপি’র চবি শাখা সাংগঠনিক সম্পাদক মিটন চাকমা।
বক্তারা বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের একের পর এক গনবিরোধী
ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। ভোটারবিহীন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম
করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের রাজনৈতিক সমস্যাকে সমাধান না করে জুম্ম ধ্বংসের
নীলনক্সা বাস্তবায়ন করছে। এমনকি জুম্ম জনগণের ওপর জুলুম নির্যাতন আরো বৃদ্ধি করতে র্যাব
বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
বক্তারা বলেন, মানবাধিকার দিবসে রাঙামাটির কাউখালীতে মধ্যরাতে সরকারী
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তরুন চাকমাকে বেআইনীভাবে আটক করে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন
করেছে।
বক্তারা অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যায় গ্রেফতার, বিনা বিচারে
হত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা এবং নিখোঁজ ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমার সন্ধান
ও মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
সমাবেশ থেকে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় বাহিনীর
সক্রিয় অংশগ্রহণ ও পৃষ্ঠপোষকতায় পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে
ধরা হয়।
এতে বলা হয়, ২০১৮ সালে ইউপিডিএফ নেতা-কর্মী, সমর্থকসহ ৫৯ জন এবং ২০১৯
সালে ৭১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিনা বিচারে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে ৭ জনকে।
এছাড়া রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী (মুখোশ ও সংস্কার) কর্তৃক ইউপিডিএফ’র নেতা-কর্মী
ও সমর্থকসহ ৩৭ জন খুন ও ১৪৬ জন অপহরণের শিকার হয়েছে। বর্তমানে মিথ্যা মামলায় খাগড়াছড়িতে
১৪ জন এবং রাঙামাটিতে ৪৪ জন ইউপিডিএফ’র নেতা-কর্মী ও সমর্থক কারান্তরীণ রয়েছেন বলে
উল্লেখ করা হয়েছে।
-----------