সাজেক প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
রাঙামাটির বাঘাইহাট জোনের সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাজেকের উজোবাজার ও মাজলং বাজারের দোকান ব্যবসায়ীদের মালবাহী গাড়িসহ সাধারণ যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন বৌ যাত্রীসহ শতশত সাধারণ যাত্রী।
বাঘাইহাট জোন কমাণ্ডার লে. কর্নেল মো. মাসুদ রানা নিজেই এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন
বলে জানা গেছে।
আজ সোমবার (২৮ এপ্রিল ২০২৫) সকাল হতে খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালা থেকে উজোবাজার-মাজলং
বাজারে যাওয়া ব্যবসায়ীদের মালবাহী গাড়ী বাঘাইহাট জোনের ৬নং চেক পোষ্টে আটকে দেওয়া হয়
বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল জেএসএস সন্তু গ্রুপের কমান্ডার লিটন চাকমা, গণসংযোগ
বিভাগের প্রধান বিক্রম চাকমা ও কালেক্টর নীরব চাকমা মাজলং ও বাঘাইহাট এলাকার পাহাড়ি
দোকান ব্যবসায়ীদেরকে উদয়পুর বাজার থেকে উচ্ছেদ করে ও উদয়পুর বাজারে যাওয়া নিষেধ করে
দেয়। এর প্রতিবাদে বাঘাইহাট ও মাজলং এলাকার ব্যবসায়ীরাও উদয়পুর বাজারে মালামাল সাপ্লাই
দেয়া বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়টি নিয়ে জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মাসুদ রানা সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের
ডেকে সমাধান করার জন্য দু’দিন সময় বেঁধে দেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, জেএসএস সন্তু গ্রুপের লোকেরা
বাঘাইহাট জীপ সমিতি ও বিভিন্ন পাইকারী মালামাল সাপ্লাইয়ারদের উজোবাজার ও মাজলং বাজার
মালামাল না দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। কোন দোকানদার যদি মালামাল সাপ্লাই দেয়, কোন
গাড়ি যদি মাল পরিবহন করে তাহলে বড় ধরনের ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছে সন্তু গ্রুপের লোকেরা।
অপরদিকে, বাঘাইহাট জোন কমান্ডার লে: কর্ণেল মো: মানুদ রানার নেতৃত্বে বাঘাইহাট
জোনের ৬নং চেক পোষ্টে মালবাহী গাড়িসহ সাধারণ যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। দিনভর গাড়ি আটকিয়ে সাধারণ
যাত্রীদের তল্লাশি ও হয়রানি করা হয় বলে ভুক্তভোগীদের অনেকে অভিযোগ করেছেন।
মূলত উদয়পুর বাজারে মালামাল সাপ্লাই বন্ধ থাকার কারণে জেএসএস সন্তু গ্রুপের যোগসাজশে সেনাবাহিনী এ ধরনের হয়রানিমূলক কাজ করছে বলে তারা মন্তব্য করেন।
 |
| বাঘাইহাট জোনের ৬নং চেকপোস্ট এলাকায় সেনা সদস্যরা গাড়ি আটকায়। |
সারাদিন যাত্রীবাহী গাড়ি আটকিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে হয়রানিমূলক তল্লাশি করে গাড়ি
ছেড়ে দেয়া হলেও সন্ধ্যার পর কোন গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়নি। তম্মধ্য মাজলং বাজার বৌ যাত্রী
গাড়িও আটকে রাখা হয়েছে। যার ফলে মাঝপথে থাকা-খাওয়া নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন শতশত পাহাড়ি-বাঙালি সাজেকগামী যাত্রী।
তবে পর্যটকবাহী গাড়ি যেতে করতে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আর আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে সাজেক পর্যটকবাহী ও পর্যটনের দোকান ব্যবসায়ীদের মালামাল বাদে সেনারা উজোবাজার ও মাজলং বাজারের পাহাড়ি দোকান ব্যবসায়ীদের কোন মালামাল নিতে দেবে না বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
সেনাবাহিনীর এহেন কর্মকাণ্ডে সাধারণ লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে
জানিয়ে এলাকার জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা এ ধরনের হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধের
জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
