""

দীঘিনালায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও সমাবেশ



দীঘিনালা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় 'বিশ্ব পরিবেশ দিবস' উপলক্ষে র‌্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দীঘিনালা উপজেলা পরিবেশ রক্ষা কমিটি এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

দিবসটি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার  (৫ জুন ২০২৫)  সকাল ৯  টার সময় একটি র‌্যালি বাবুছড়া নোয়াবাজার হতে শুরু হয়ে সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাবুছড়া মুখ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গন ঘুরে পূনরায় নোয়াবাজারে এসে শেষ হয় এবং সেখানে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

সমাবেশে ৩৬ নং ধনপাদা মৌজা হেডম্যান যুব লক্ষন চাকমার সভাপতিত্বে ও শান্তি প্রিয় চাকমার সঞ্চালনা বক্তব্য রাখেন, বাবুছড়া বাঁশ ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি অরুন বিকাশ চাকমা, ইউপি সদস্য প্রতিভা চাকমা ও বাবুছড়া চেয়ারম্যান গগন বিকাশ চাকমা প্রমুখ।

ইউপি প্রতিভা চাকমা বলেন,বেশি দূরের কথা নয়, ৪০-৫০ আগে এলাকায় সবুজ বন ছিলো। বন্য প্রাণী দেখা যেতো। বর্তমানে সেইরূপ নেই। বনকে অপরিকল্পিত ব্যবহারের ফলে দিন দিন বন উজাড় হচ্ছে। তিনি সবাইকে পরিবেশের জন্য উপযোগী বিভিন্ন প্রজাতির গাছ এবং বাঁশ বন সৃজন করার আহ্বান জানান।

অরুন বিকাশ চাকমা বলেন, কেবল গাছ-বাঁশ ধ্বংসের ফলে পরিবেশ ক্ষতি হচ্ছে তা নয়,  মানুষের অসচেতনভাবে ব্যবহৃত প্লাস্টিকসহ নানা রাসায়নিক পদার্থও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। 

তিনি বলেন অপরিকল্পিত জুমচাষ, সেগুন ও রাবার গাছের বাগান সৃজন, তামাক চাষ, যত্রতত্র পাহাড় কাটা, পাথর উত্তোলন, বিরল বন্যপ্রাণী শিকার, অবাধে গাছ কাটার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তাই এসব বন্ধ করতে হবে।

চেয়ারম্যান গগন বিকাশ চাকমা বলেন, পরিবেশ রক্ষার্থে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। এলাকায় এলাকায় প্রচারণা চালাতে হবে। পরিবেশ বান্ধব বৃক্ষ রোপন করতে হবে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাঁশ, গাছ কাটা ও জুম চাষ রোধ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশের সভাপতি যুব লক্ষন চাকমা বলেন, এ অঞ্চলকে  ঠিক রাখতে হলে সবাইকে পরিবেশ বিষয়ে সচেতন হতে হবে, পরিবেশের ক্ষতি সম্পর্কে জানতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, আমরা অনেকেই অপরিকল্পিতভাবে জুমচাষ করি। এই জুমচাষ করতে গিয়ে আমরা অনেক গাছপালা, বাঁশবন কেটে ফেলি এবং তাতে আগুন লাগিয়ে দিই। এটাও পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

তিনি বন ও বন্য প্রাণী রক্ষায় সামাজিকভাবে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন মন্তব্য করে বলেন, বৃটিশ আমলে গড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চল এখন প্রায় নেই। এতে সরকারি বন বিভাগও বন এবং পরিবেশ ধ্বংসের জন্য কম দায়ি নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বাচ্ছুরি বেচা-কেনা বন্ধ করা, অবাধে গাছ কাটা বন্ধ করা, বন্যপ্রাণী শিকার হতে বিরত থাকা, প্লাস্টিক-পলিথিন ব্যবহারে সচেতন হওয়া এবং প্লাস্টিক জাতীয়  জিনিসপত্র ব্যবহারের পর সুনির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দিয়ে ধ্বংস করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

র‌্যালি ও সমাবেশে "নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বন, নদী ও প্রাণী বাঁচাও; যেখানে সেখানে বনে আগুন লাগাবেন না; বাঁশ ও গাছ বন "জুম চাষ" থেকে বিরত থাকুন; ছড়া-নদীতে বিষ দিয়ে ইছা, মাছ ও কাঙরা ধরবেন না;  মাঘ-ফাল্গুন মাস  থেকে ৩০ জৈষ্ঠ  পর্যন্ত বেঙ-বেঙাচি খাবেন না;  বৈশাখ  থেকে ৩০ শ্রাবন  পর্যন্ত বাচ্চুরী ক্রয়-বিক্রয় থেকে বিরত থাকুন;  যেখানে সেখানে পলিথিন-প্লাষ্টিক বর্জ্য ফেলাবেন না;  হাট-বাজার, দোকানপাট,পথ-ঘাট পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন; বন্য প্রাণী, পশু-পাখি শিকার থেকে বিরত থাকুন" ইত্যাদি শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments