মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বাংলাদেশের সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি; এদেশের এযাবৎ ক্ষমতাসীন প্রত্যেকটি সরকার জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি উপেক্ষা করেছে। বাংলাদেশ যে বহু জাতি ও বহু ভাষার রাষ্ট্র, তা প্রতিফলিত করার জন্য হলেও সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা।
সমাবেশে তিনি জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে জাতিসত্তার পরিচিতিমূলক বিবরণী লিপিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে জাতিসত্তার প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য বাতিল এবং বীরত্বব্যঞ্জক সঠিক ইতিহাস পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভূক্তির দাবি জানান।
সমাবেশের একাংশ |
এছাড়া সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি দীপা মল্লিক, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ চৌধূরী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ হায়দার চঞ্চল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের দপ্তর সম্পাদক অরূপ দাস শ্যাম, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় এবং ছাত্র ফ্রন্টের মোজাম্মেল হক-সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে দীপা মল্লিক বলেন, বায়ান্ন সালে ভাষার জন্য যে লড়াই সংগ্রাম ছিলো , তার চেতনা কোন একটি নির্দিষ্ট ভাষার জন্য নয়। সকলের মাতৃভাষায় শিক্ষালাভ এবং কথা বলার অধিকারের জন্য।
তিনি আরো বলেন, ফেব্রুয়ারি ভাষার মাস। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা রক্ষার দাবিতে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের চাপিয়ে দেয়া উর্দু ভাষাকে মেনে না নিয়ে আন্দোলন করেছিল ছাত্র-জনতা। ছাত্রদেরকে দমাতে ৪৪ ধারা জারী করেছিল তৎকালীন সরকার। কিন্তু ছাত্ররা সেই ৪৪ ধারা ভেঙে নিজেদের ভাষার অধিকার ছিনিয়ে আনতে মিছিল শুরু করলে কার্জন হলের সামনে সেই মিছিলে গুলিবর্ষণ করে রফিক, শফিক, সালাম, জব্বার ও বরকত প্রাণ হারান। সেই ফেব্রুয়ারি মাসেই মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের অধিকার ও সকল জাতিসত্তার জনগণের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি নিয়ে আজকে রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে দাঁড়িয়েছি।
তিনি বলেন, বিদ্যমান এই চরম ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থায় মানুষের বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেয়া, শিক্ষার বেসরকারিকরণ - ইংরেজি মাধ্যম ও বাংলা মাধ্যম দিয়ে বৈষম্য তৈরি করে কেবল ধনীদের জন্যই শিক্ষা- আজকে রাষ্ট্রের নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চরম বৈষম্য ও অগণতান্ত্রিকতা যখন আমাদের কণ্ঠরোধ করে ,এমন পরিস্থিতিতে দ্রোহের ইতিহাস আমাদের জাতীয় জীবনে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠে। আমাদের মনে করিয়ে দেয়- একুশ শোকের নয়, একুশ মূলত প্রতিরোধের। দেশে-দেশে বিভিন্ন জাতিসত্তার জনগণের অধিকার আদায়ের লড়াই চলছে। বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত জনগণের এই মানবমুক্তির লড়াইকে একত্রিত করে সেই লড়াইয়ের ছায়াতলে সকলকে সামিল হতে হবে।
সমাবেশ পরবর্তী একটি মিছিল টিএসসি থেকে
শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরে আবার টিএসসিতে এসে শেষ হয়৷
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।