খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমাবর, ২১ এপ্রিল ২০২৫
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের পূর্ণ চন্দ্র কার্বারি পাড়া এলাকায়
সেনা অভিযানে ঘরবাড়িতে তল্লাশি-ভাঙচুর-লুটপাট ও নিরীহ গ্রামবাসীদের হেনস্থা-হয়রানির
নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
আজ সোমবার (২১ এপ্রিল ২০২৫) ইউপিডিএফ’র খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা
সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, জেএসএস সন্তু গ্রুপের ছাত্র সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে কথিত অপহরণের শিকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের নামে সেনাবাহিনী কয়েকদিন ধরে খাগড়াছড়িতে অভিযানের নামে ঘরবাড়িতে তল্লাশি, হয়রানি করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার ভোররাত থেকে ব্যাপক সংখ্যক সেনা সদস্য ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের পূর্ণ চন্দ্র কার্বারি পাড়া ঘেরাও করে অভিযান চালায়। এ সময় তারা একটি বাড়ি থেকে বইপত্র, ইউপিডিএফের পতাকা, পোস্টার-ব্যানারসহ ইত্যাদি উদ্ধার করেছে মর্মে “এটাকে ইউপিডিএফের গোপন আস্তানা” উল্লেখ করে সাংবাদিক ডেকে নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় অপপ্রচার চালায়। সেনারা বাড়িটিতে ভাঙচুর করে, জিনিসপত্র তছনছ ও বইপত্রসহ বিভিন্ন জিনিস পুড়িয়ে দেয়। চলে যাবার সময় সেনারা গ্রামবাসীদের রোপনের জন্য রাখা আদা, হলুদ, কচুসহ ধান কাটার কাঁচি, কম্বল, কাপড়-চোপড়, চাল, হাড়িপাতিল, চেয়ার-টেবিল, খাট, বাদ্যবাজনার সরঞ্জাম ইত্যাদি লুট করে নিয়ে যায়।
সেনারা নিরীহ ৭ গ্রামবাসীকে কিছু সময়ের জন্য আটক রেখে মানসিক নির্যাতন,
হেনস্থা ও হয়রানি করে। পরে তাদেরকে ছেড়ে দিলেও আগামীকাল সকালে ক্যাম্পে হাজির হওয়ার
নির্দেশ দিয়ে যায়।
![]() |
সেনাবাহিনী কর্তৃক বাড়ি ভাঙচুরের চিত্র |
![]() |
সেনাবাহিনী কর্তৃক বাড়ি ভাঙচুরের চিত্র |
ইউপিডিএফ নেতা বলেন, ইউপিডিএফ একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে গণতান্ত্রিকভাবেই
তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ইউপিডিএফের গোপন আস্তানা বলে কিছুই নেই। আর মিছিল-মিটিং
সভা-সমাবেশ ও পার্টি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ইউপিডিএফ তার দলীয় পতাকা উত্তোলন-প্রদর্শন,
লিফলেট বিতরণ, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে থাকে। এসব ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র, বই কোন কিছুই
গোপনীয় ও নিষিদ্ধ নয়। আর বই-পুস্তক রাখাতো কোনভাবেই অবৈধ কাজ হতে পারে না। বর্তমানে
পাড়া-গ্রামে, শহরে প্রত্যেকের বাড়িতে ব্যক্তিগত ও পাড়া-গ্রামে সামাজিক লাইব্রেরি করা
হয়ে থাকে এবং সেসব লাইব্রেরিতে নানা ধরনের বই-পুস্তক রাখা হয়।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সন্তু গ্রুপের ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে
৫ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের নামে যেভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
ও ইউপিডিএফের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। এ অভিযানের আড়ালে সন্তু
গ্রুপের সাথে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বোঝাপড়ার সুষ্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে।
তিনি অবিলম্বে এ অভিযান বন্ধ করে সুষ্ঠ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার
দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।